আজ শনিবার, ১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আ.লীগের ইশতেহার ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’

আ.লীগের ইশতেহার

নবকুমার : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’-এ স্লোগানে এবারের ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, নারীর ক্ষমতায়ন, নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তাসহ ২১টি বিশেষ অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করেছে দলটি।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহার ঘোষণা করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ২১টি অঙ্গীকারের মধ্যে এবার দুটি বিষয়ের ওপর বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি-আমার গ্রাম, আমার শহর; যেখানে প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা পৌঁছে দেয়ার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে- তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি।

ইশতেহার ঘোষণার সময় শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কথায় না, কাজে বিশ্বাস করি। অতীতে কাজ করতে গিয়ে আমাদের ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকতে পারে। আপনাদের তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি। কথা দিচ্ছি অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আগামীতে আরও সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ করব। জাতির পিতার কাঙ্ক্ষিত ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষর মুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব ইনশাল্লাহ।

২০০৮ সালের ‘দিনবদলের সনদ’, ২০১৪ সালের ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ এরপর আসন্ন ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’।

২১ দফা অঙ্গীকার তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচিত হলে আনুপাতিহারে জনবল নিয়োগ হবে পুলিশ বাহিনীতে। অব্যাহত থাকবে জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি। আগামী পাঁচ বছরে দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে। জিডিপি উন্নীত করা হবে ১০ শতাংশে, সামাজিক সুরক্ষাপ্রাপ্তের সংখ্যা দ্বিগুন করা হবে, বাড়বে ভাতা। ঢাকা ও বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে বুলেট ট্রেন করার কথা জানান তিনি।

এবারের ইশতেহার ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের ধারাবাহিকতা উল্লেখ করে এ সকল অঙ্গীকারে তুলে ধরে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকায় ভোট চান শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ২১টি বিশেষ অঙ্গীকার হলো:

‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ শিরোনামে গ্রামভিত্তিক উন্নয়ন তথা গ্রামে আধুনিক সুবিধার উপস্থিতি, শিল্প উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, জলবায়ু পরিবর্তন ও সুরক্ষা, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ, ক্রীড়া, সংস্কৃতি, প্রতিরক্ষাসহ অন্যান্য খাতে থাকছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। ইশতেহারে ২১টি অঙ্গীকার উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো-১. আমার গ্রাম, আমার শহর- গ্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ। ২. তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি: তরুণ যুব সমাজকে দক্ষ জনশক্তিকে রূপান্তরিত করা এবং কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা। ৩. দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ। ৪. নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশুকল্যাণ। ৫. পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা। ৬. সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূল। ৭. মেগা প্রজেক্টগুলোর দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়ন। ৮. গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা। ৯. দারিদ্র্য নির্মূল। ১০ সকল স্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধি। ১১. সকলের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা। ১২. সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার। ১৩. বিদ্যুত্ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চয়তা। ১৪. আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা- লক্ষ্য যান্ত্রিকিকরণ। ১৫. দক্ষ ও সেবামুখী জনপ্রশাসন। ১৬. জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। ১৭ ব্লু ইকোনোমি- সমুদ্র সম্পদ উন্নয়ন। ১৮. নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা। ১৯ . প্রবীণ, প্রতিবন্ধী ও অটিজম কল্যাণ। ২০. টেকসই উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। ২১. সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি। এদিকে ইশতেহারে জাতীয় প্রেসক্লাবের বহুতল ভবন করার অঙ্গীকার করা হয়েছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ